হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব ও হস্তমৈথুন ছাড়ার উপায়
হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাচার উপায় :
হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব জানা খুবই বেশি প্রয়োজন। প্রত্যেক পুরুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এই সময় বিভিন্ন সঙ্গের কারণে হস্ত মৈথুন নামক ভয়ানক অভ্যাসটি গড়ে উঠে।
হস্তমৈথুন এমন একটি অভ্যাস যা একবার কাউকে পেয়ে বসলে ত্যাগ করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। হস্তমৈথুন অভ্যাসটি অনেকের যৌন জীবনে বিপর্যস্ত করে তুলে। হস্তমৈথুনের কারণে ২ ধরণের সমস্যা হয়। যথা:
১. মানসিক সমস্যা
২. শারীরিক সমস্যা
হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাব:
হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর প্রভাবগুলো আমাদের বাস্তব জীবনে প্রতিফলন হয়। হস্তমৈথুন বেশি করার কারণে শরীর অল্প দিনের মধ্যে খারাপ বা অসুস্থ হয়। সেই জন্য হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর দিক গুলো জানা খুবই প্রয়োজন। মাত্রাতিরিক্ত হস্ত মৈথুনের ফলে যে সমস্যা গুলো দেখা দেয়।
১. অকাল বীর্যপাত ফলে স্বামী তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে পুরোপুরি সক্ষম হয় না। ফলে বৈবাহিক সম্পর্কে অশান্তি নেমে আসে।
২. বিজ্ঞান ভাষায়, কোনো পুরুষের থেকে যদি ২০ কোটির কম শুক্রাণু বের হয় তাহলে সেই পুরুষ সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না। মাত্রাতিরিক্ত হস্তমৈথুন পুরুষের যৌনাঙ্গ একেবারেই দুর্বল হয়ে যায়।
৩. Nervous system, heart, digestive system, urinary system এবং বিভিন্ন রকম system ক্ষতিগ্রস্ত হয় । সমস্ত শরীর একেবারেই দুর্বল হয়ে যায় ও শরীরের রোগ-বালাইয়ের জাদুঘর হয়ে যায়।
৪. বীর্য পাতলা হলে বীর্যের শুক্রাণুর সংখ্যা একেবারেই কমে যায়। তখন বীর্যের শুক্রাণু সংখ্যা হয় ২০ মিলিয়নের কম। যার ফলে সন্তান জন্মদানে ব্যর্থতা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫. চোখের সমস্যা হয়।
৬. কানে কম শুনা।
৭. নাকের ঘ্রাণ শক্তি কমে যায়।
৮. স্মরণ শক্তি পুরোপুরি কমে যায়।
৯. মাথা ব্যথা ও বিভিন্ন রকম সমস্যা হয়।
১০. সামান্য উত্তেজনায় যৌনাঙ্গ থেকে তরল জাতীয় পদার্থ বের হয়। ফলে শারীরিক ব্যথা ও মাথা ঘোরা ইত্যাদি।
১১. যৌন ক্রিয়ার সাথে জড়িত স্নায়ুতন্ত্রগুলো একেবারেই দুর্বল হয়।
১২. শরীরের বিভন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গের সমস্যা হয়। যেমন- হজম ও প্রসাব প্রক্রিয়া ইত্যাদি। দ্রুত বীর্য বের হওয়ার প্রধান কারণ মাত্রাতিরিক্ত হস্ত মৈথুন।
হস্তমৈথুন ছাড়ার সহজ ও কার্যকরী উপায়:
১। যতটা সম্ভব নিজেকে কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত রাখুন।
২। হস্ত মৈথুন খারাপভাবে এডিক্টেড হলে কখনোই একা একা থাকবেন না। ঘরে সময় কাটাবেন কম ও বাইরে সময় কাটাবেন বেশি। যেমন- বাইরে জগিং করা ও সাইকেল নিয়ে ঘুরা ইত্যাদি করতে পারেন। ছাত্র হলে ক্লাস বন্ধুদের সাথে পড়াশুনা করতে পারেন। লাইব্রেরি বা কফি দোকানে গিয়ে সময় কাটাতে পারেন।
৩। ভিডিও গেমস খেলতে পারেন। এই ভিডিও গেমস হস্তমৈথুনের কথা পুরোপুরি ভুলিয়ে দেবে।
৪। সন্ধ্যায় সময় কখনই ঘুমাবেন না। কিছু করার না থাকলে ছবি দেখুন বা বই পড়ুন।
৫। কোন সময়গুলোতে হস্তমৈথুন বেশি করেন, সেই সময়গুলো মার্ক করুন। বাথরুমে বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি উত্তেজিত থাকেন, হঠাৎ কোনও সময়ে যদি হস্ত মৈথুনের ইচ্ছে জাগে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই কোনো না কোনো শারীরিক পরিশ্রমের কাজে বা ব্যায়াম করতে লেগে যান। যতক্ষণ পর্যন্ত শরীর ক্লান্ত না হয়, অর্থাৎ হস্তমৈথুন করার মত শক্তি না থাকে, ততক্ষণ পর্যন্তই কোনো কাজ বা ব্যায়াম করুন।
স্নান বা গোসল করার করার সময় হস্তমৈথুনের ইচ্ছে জাগলে শুধুমাত্র ঠাণ্ডা জল ব্যবহার করুন এবং দ্রুত সময়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসুন।
৬। ধৈর্য সময় ধরতে হবে। একদিনে হস্তমৈথুন নেশা থেকে মুক্তি পাবেন, এমনটা কিন্তু না। একাগ্রতা থাকলে আস্তে আস্তে এই নেশা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসা যায়। মাঝে মধ্যে ভুল হয়ে যাবে। তখন সব হাল ছেড়ে দেবেন না। চেষ্টা সবসময় করে যাবেন।
৭। খারাপ যেকোনো জিনিস একেবারেই এড়িয়ে চলবেন।
৮। ছোট ধরণের টার্গেট সেট করুন। ধরে নিন, প্রথম টার্গেট টানা ২-৩ দিন হস্তমৈথুন করবেন না। ২-৩ দিন না করে পারলে আস্তে আস্তে সময় বাড়াতে থাকবেন।
৯। হঠাৎ বিছানায় যাবেন না। কোথাও বসলে অন্যদের সঙ্গে নিয়ে বসবেন।
১০। বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথে বেশি বেশি সময় কাটান।
১১। ধ্যান বা যোগ ব্যায়াম করতে পারেন।
১২। ফোনে খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকা।
১৩। বিকাল বেলার পরে উত্তেজক ও গুরুপাক জাতীয় খাবার কখনই খাবেন না।
সুতরাং, হস্তমৈথুন নামক যৌন বিকৃতি থেকে সবসময় দূরে থাকুন। মহান আল্লাহ্ তা’আলাকে সবসময় ভয় করুন। আপনার বন্ধু-বান্ধবীদের হস্তমৈথুনের ব্যাপারে সচেতন করুন। সবশেষে হাদীস,
রসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেন: “যে ব্যক্তি আমাকে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী জিনিস (জিহ্বার) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী জিনিস (যৌনাঙ্গ) নিশ্চয়তা দেবে আমি তার বেহেশতের নিশ্চয়তা দিব।” (বুখারী ও মুসলিম)