অতিরিক্ত হস্তমৈথূন্য জনিত সমস্যা সমাধান
অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না, হস্তমৈথূনের ক্ষেত্রে ও কথাটা একইভাবে প্রযোজ্য। ইয়ং ছেলে মেয়েদের মধ্যে হস্তমৈথূনের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কিন্তু ‘অতিরিক্ত হস্তমৈথূন’ আজকের জেনারেশনের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অতিরিক্ত হস্তমৈথুন ছাড়ার উপায় কি? ‘অতিরিক্ত হস্তমৈথূন্য জনিত সমস্যা সমাধান’ করতে হবে। সেজন্য প্রথমেই ছেলে মেয়েদের হস্তমৈথূন্য বিষয়ে সচেতন করতে হবে।
তাই, আজকের আলোচনায় আমরা দেখব:-
- হস্তমৈথূন কি??
- হস্তমৈথূনের সুফল ও কুফল
- হস্তমৈথূন্য জনিত সমস্যা
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূন্য জনিত সমস্যা সমাধান
হস্তমৈথূন :
হস্তমৈথূন একরূপ যৌনক্রিয়া, যেখানে একজন নারী বা পুরুষ কোনো সঙ্গী বা সঙ্গীনির অংশগ্রহণ ছাড়াই যৌনসুখ উপভোগ করার চেষ্টা করে। যেহেতু প্রধানত হাতের সাহায্যে একজন পুরুষ তার লিঙ্গ এবং একজন নারী তার যোনী ঘর্ষন করে তাকেই হস্তমৈথূন বলা হয়ে থাকে।
হস্তমৈথূনের কুফল :
হস্তমৈথূনের কিছু সুফল বা উপকারী দিক যেমন আছে তেমনি খারাপ দিক ও রয়েছে। তাই এই হস্তমৈথূন প্রচুর সমস্যা ও সৃষ্টি করে। হস্তমৈথূনের ফলে যে যে সমস্যা দেখা যায় তা নিম্নলিখিত :
হস্তমৈথূন্য জনিত সমস্যা :
‘হস্তমৈথূন’ এমন একটি স্বাভাবিক যৌনক্রিয়া,যা নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও অতিরিক্ত মাত্রায় বা বদ অভ্যাসে পরিণত হলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়।ফলে অনেকের যৌনজীবনকে ও বিপর্যস্ত করে তোলে।
অতিরিক্ত হস্তমৈথূন করার ফলে মানবজীবনে দুই ধরণের সমস্যা হয়ে থাকে শারীরিক সমস্যা ও মানসিক সমস্যা।
শারীরিক সমস্যা :
অতিরিক্ত হস্তমৈথূনের কারণে শক্তি হ্রাস হয় সেই সাথে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরা।
এছাড়া ও যে সব শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তা জেনে নিন বিস্তারিত :
- অতিমাত্রায় হস্তমৈথূনে যৌনক্রিয়ার সাথে জড়িত স্নায়তন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। এমনকি যৌনরোগ ও দেখা দেয় পুরুষ বা নারী উভয়ের মধ্যে।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূন চোখের ক্ষতি করে, দৃষ্টিশক্তি দুর্বল করে তোলে।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূনের জন্য পুরুষের বীর্যে শুক্রানুর সংখ্যা কমে যাওয়ায় পুরুষ বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূনের ফলে পুরুষ যেসব সমস্যায় ভুগতে পারেন তার মধ্যে অন্যতম হল নপুংসকতা। অতিরিক্ত হস্তমৈথূনে পুরুষ যৌনসঙ্গমে অক্ষম হয়ে পড়ে ও ধীরে ধীরে নপুংসক হয়ে যায়।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূনে অনেক পুরুষ তাদের লিঙ্গে দুর্বলতা অনুভব করে যার কারন হল অল্প বয়সে হস্তমৈথূন করা।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূন পুরুষের যৌনাঙ্গকে শিথিল করে তোলে যার কারন হতে পারে ভুল পদ্ধতিতে হস্তমৈথূন।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূনের ফলে দ্রুত বীর্যপাত হতে থাকে যার ফলে বিবাহিত জীবনে সমস্যা দেখা দেয়।
- পুরুষাঙ্গে ছিদ্র সৃষ্টি হয় এবং প্রসাবে বাঁধা দেয়।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূনের জন্য শরীর দুর্বল লাগে।অতিরিক্ত হস্তমৈথূন করার ফলে বিয়ের পর স্বামী অনেক সময় স্ত্রী কে যৌনতৃপ্তি দিতে পারে না। তাই সাংসারিক জটিলতা সৃষ্টি হয়।
- অতিরিক্ত হস্তমৈথূনের জন্য পুরুষের শরীর থেকে বীর্যপাত হওয়ায় টেস্টাটেরন হরমোনের উপর প্রভাব পড়ে ফলে হজম ক্ষমতা কমতে থাকে।
হস্তমৈথূন্য জনিত মানসিক সমস্যা :
অতিরিক্ত মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুন এর কারণে কোন ব্যক্তির যে শুধুমাত্র শারীরিক সমস্যা হয় এটা কিন্তু না অতিরিক্ত মাস্টারবেশনের কারনে কোন ব্যক্তির শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি নানা রকম মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যেমন সেই ব্যক্তি যে কোন মানসিক কাজে অসফল হতে থাকে যার ফলে সে সবসময় নির্জনতা পছন্দ করে তার জ্ঞান বুদ্ধি অনেকটা লোপ পায়।
অতিরিক্ত হস্তমৈথূন্যজনিত সমস্যা সমাধান :
অতিমাত্রায় হস্তমৈথূন্য জনিত সমস্যা অনেকের যৌনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে।
বর্তমান জনজীবনকে বাঁচাতে অতিরিক্ত হস্তমৈথূন্য জনিত সমস্যা সমাধান করতে হবে।
অতিরিক্ত হস্তমৈথূন্য জনিত সমস্যা সমাধান করতে হলে অতিমাত্রায় হস্তমৈথূন বন্ধ করতে হবে। আর আমরা নিজেরাই একটু সচেতন হয়ে, নিজেদের প্রচেষ্টায় এই হস্তমৈথূন জনিত সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি।
হস্তমৈথূন জনিত সমস্যা থেকে বার হওয়ার টিপস :
- কোন কোন সময়ে হস্তমৈথূনের ইচ্ছা হয় সেই সময়গুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং সেই সময়গুলো নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে।
- পর্ণমুভি, পর্ণ পিকচার যা কিছু হস্তমৈথূনের ইচ্ছা জাগায় সেই সব কিছু ত্যাগ করতে হবে।
- নেশায় পরিণত হওয়া হস্তমৈথূন একদিনেই ছাড়তে পারবেন না। ধৈর্য্য ধরতে হবে, আসতে আসতে ছাড়তে হবে।
- কম্পিউটারে যদি পর্ণ দেখেন তাহলে কম্পিউটারটা নিজের শোবার ঘরে না রেখে যেখানে সবাই থাকে বসার ঘরে রাখতে হবে। সবাই সামনে থাকলে পর্ণ দেখতে অসুবিধা হবে।
- মেয়েদের দিকে কুনজরে তাকাবেন না, পবিত্র নজরে দেখতে হবে।
- আশেপাশের বন্ধুমহল বা যারা মেয়েদের নিয়ে বাজে বিষয় বা পর্ণ নিয়ে চর্চা করে তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে।
- নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রাখুন যাতে হস্তমৈথূনের চিন্তা নিজের মধ্যে জমাট বাঁধতে না পারে।
- হস্তমৈথূন একেবারেই বন্ধ করতে হবে না নিজের মনকে এভাবে প্রস্তূত করুন যে ঘন ঘন বা অতিরিক্ত না মাঝে মাঝে করতে হবে।
- সন্ধ্যায় তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লে হবে না। গল্পের বই পড়ুন।
- মনে সেক্সুয়াল চিন্তা আসলে ভিডিও গেম খেলতে পারেন।
- বাথরুমে গিয়ে হস্তমৈথূনের অভ্যাস থাকলে তাড়াতাড়ি বাথরুম থেকে আসার চেষ্টা করতে হবে।
- ঘুমানোর আগে যদি উত্তেজনা আসে বা হস্তমৈথূনের ইচ্ছা হয় তখন যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করা যেতে পারে।
- গার্লফ্রেন্ড বা প্রেমিকার সাথে শুয়ে বা নির্জনে প্রেমালাপের কথা যতটা সম্ভব কমাতে হবে।
- উপুর হয়ে শোওয়া বন্ধ করতে হবে।
- ঘুমানোর সময় দরজা বা জানালা খোলা রাখুন বা আলো জ্বালিয়ে ঘুমান।
- ফোনসেক্স বন্ধ করতেই হবে। এমনকি পারলে ইন্টারনেটে পর্ণসাইট ব্লক করে দিন।
- পরিবারের সাথে সময় কাটান।
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা আজকে আমার এ পোস্ট এর মাধ্যমে জানতে পারলেন যে হস্তমৈথুন কি এবং হস্তমৈথুনের সুফল এবং কুফল সম্পর্কে। আপনাদের পোষ্ট ভালো লেগে থাকে বা উপকারী মনে হয় তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন ধন্যবাদ সবাইকে